প্রকাশিত: / বার পড়া হয়েছে
বিগত ১৭ বছর বিএনপির আন্দোলন সংগ্রামে তৃনমুলের অবদান ছিল চোখে পড়ার মত। তৃনমুল নেতা কর্মিরা ঘর সংসার, ব্যাবসা বানিজ্য কে দূরে রেখে, দলের যে কোন কর্মসূচি সফল করতে মরিয়া ভূমিকা পালন করেছে, বিনিময়ে হামলা মামলা নির্যাতন নিপীড়নের খড়কে ছিল জর্জরিত।
বিগত বিনাভোটের অবৈধ সরকারের পায়ের তলার মাটি নড় বড়ে হলেও বিএনপির কেন্দ্রীয় আন্দোলন জোরালো না হওয়াতে তারা সফল হতে পারে নি। বিভিন্ন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও পত্র-পত্রিকার বিশ্লেষণেও উঠে এসেছে তাই।
খোদ বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াও বিগত ১৪, ১৮, এবং ২৪ শের বিনা ভোটের সরকার কে রুখতে না পারার জন্য কেন্দ্র কে দায়ী করেছেন এবং তৃনমুল কে বাহবা দিয়েছেন।
২৪ শের গনঅভ্যুত্থানের পেক্ষাপট অনেক আগে তৈরি হলেও মূলত রাজধানীতে আন্দোলনের কৌশল ও নেতা কর্মিদের গা ছাড়া ভাবের জন্য বিএনপি একক আন্দোলন করে বিগত সরকারকে হাঠাতে ব্যার্থ হয়েছেন।
কেন্দ্রীয় বিশেষ করে ঢাকার আন্দোলন কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা ছাত্র জনতা শিখিয়েছে মাত্র ৩৬ দিনে। জুলাই আগষ্ট বিপ্লবের মূল ক্ষেত্রই ছিল রাজধানী কেন্দ্রীক। বিগত সময়ে রাজধানীর ব্যার্থ আন্দোলন সংগ্রাম কে বিচার বিশ্লেষণ করে ছাত্র জনতার সিদ্ধান্ত ছিল, যে কোন মূল্যে কেন্দ্র নিয়ন্ত্রণ রাখতে হবে, যার কারনে ৫ আগষ্ট বিজয়ী হয়েছে বিপ্লবী ছাত্র জনতা।
পেক্ষাপট পরিবর্তনের পর কেন্দ্র বা বিভাগীয় শহর গুলো কিছুটা সংযত থাকলেও বেপরোয়া আচরন করছে প্রশংসিত তৃনমুল। দলীয় সৎ ও নীতি বান নেতারাই তৃনমুলের কর্মকাণ্ডে অনেক টা তিক্ত বিরক্ত।
প্রতিদিন খবর
ের কাগজ খুললেই বিভিন্ন জেলা উপজেলায় চাঁদাবাজী, দখল, দলীয় কোন্দল, সহ নানা অপকর্মের সাথে জড়িত থাকার খবর পাওয়া যাচ্ছে।
বিএনপির হাই কমান্ড শোকজ, বহিস্কার সহ কঠোর পদক্ষেপ নিলেও কে শুনে কার কথা নীতিতে চলছে তৃনমুল নেতা কর্মিরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যাবসায়ী বলেন, পরিস্থিতি আগের মতই আছে, আগেও চাঁদা দিতাম এখনো দিচ্ছি পরিবর্তন কই?
আরেকজন বলেন আগে মাসে ১৫ দিতাম এখন ১০ দি, ৫ ডিসকাউন্ট পাইছি।
একজন ব্যাবসায়ী বলেন গত হাত বর্তমান হাতকে ফোন করে কার কাছ থেকে কত নিত সব বলে দিয়েছে। তবে নতুন হাত কিছু কম নিচ্ছে হয়ত ক্ষমতায় গেলে আরো বেশি নিবে।
বিভিন্ন হাটে বাজারে কানা গুশা শোনা যাচ্ছে ক্ষমতায় না যেতে এই অবস্থা ক্ষমতায় গেলে কি হয় আল্লাহই ভাল যানে।
চাঁদা দিতে না চাইলে নেতারা উদাহরণ দিয়ে বলেন ১৭ বছর তাদের দিয়েছেন এখন আমাদের দিলে দোষ কি?
কারা চাঁদা নিচ্ছে প্রশ্ন করলে বলে রাজনৈতিক দল ও প্রশাসনের লোকেরা ভাগাভাগি করে নিচ্ছে। তবে বেশির ভাগ ভুক্তভোগী বিএনপির দিকেই আঙ্গুল তুলছে বেশি।
জনগনের ভাষায় আওয়ামী লীগ যে পথে হেটেছে বর্তমান রাজনৈতিক দল গুলোও সেই পথে হাটছে,
তাহলে কেন এত ত্যাগ? কেন রক্তপাত? কোন পরিবর্তনের আশায় জীবন দিল আবু সাইদ মুগ্ধ রা?
এসব বিষয় গুলো নিয়ে চুল ছেরা বিশ্লেষণ করছে বিএনপির হাই কমান্ড। আগামী নির্বাচন কে সামনে রেখে যত কাল ক্ষেপন হচ্ছে ততই তৃনমুলকে নিয়ে বিএনপির কপালে চিন্তার বাজ দীর্ঘ হচ্ছে। তাই বিএনপি নির্বাচনের জন্য তাড়াহুড়ো করছে বলে অনেকের অভিমত।
বিএনপি সহ পৃথিবীর সকলের কাছে ধারনা নির্বাচন হলেই বিএনপি বিপুল ভোটে জয় লাভ করে ক্ষমতায় আসীন হবে।
এই ধারনা টা গনঅভ্যুত্থানের আগে ও পরের কিছু দিন যৌক্তিক হলেও সময়ের সাথে সাথে সেটি অযৌক্তিক তর্কে রুপান্তরিত হচ্ছে।
বিএনপির তৃনমুলের নেতা কর্মিরা গনঅভ্যুত্থানে মর্ম না বুজে অনৈতিক কর্মে যে ভাবে জড়িয়ে যাচ্ছে তা আগামী নির্বাচনে বিএনপির জন্য কাল হয়ে দাড়াবে কি না তা নিয়ে জল্পনা কল্পনা রয়েছে।
এসব অপকর্মে জড়ানো অবাধ্য নেতা কর্মিদের বিষয়ে অভিযোগের পাহাড় জমা হয়েছে কেন্দ্রীয় বিএনপি অফিসে, ইতিমধ্যে প্রায় ১ হাজার নেতা কর্মিকে বহিষ্কার ও অসংখ্য শোকজ পদাবনতি করেও নিয়ন্ত্রণ করতে হিমশিম খাচ্ছে কেন্দ্র।
চৌকস রাজনৈতিক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তার সকল বক্তৃতা বিবৃতিতে নেতা কর্মিদের আগামী নির্বাচনের চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে কেন বার বার অবহিত করছেন তা তৃনমুল সহ নেতা কর্মিরা বুজতে চাইছে কি না তা নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
যদি নির্বাচনের সময় দীর্ঘ হয় এবং বিএনপির তৃনমুল সংযত না হয় তাহলে আগামী নির্বাচনে বিএনপি কে বড় মাশুল গুনতে হতে পারে বলে অনেকে ধারনা করছেন। আর সেই মাশুলের সুবিধা নিতে পারে জামায়াত সহ অন্য দল গুলো।